• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

পানির স্তর নেমে যাওয়ায় শুস্ক মৌসুমে পানি শুন্য কুষ্টিয়ার গড়াই নদী

  • ''
  • প্রকাশিত ১৭ এপ্রিল ২০২৪

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:

কুষ্টিয়ার মাঝে প্রবাহিত অপরূপ প্রমত্ত গড়াই নদী আজ প্রায় মৃত অবস্থা। বসন্ত শেষ হতে না হতেই পানির খুব একটা অস্তিত্ব নেই কুষ্টিয়ায় প্রবাহিত গড়াই নদীতে। প্রমত্তা গড়াই এখন পরিনত হয়েছে ছোট খালে। সেই সাথে নেমে গেছে পানির স্তর। এর প্রভাবে কুষ্টিয়া পৌর এলাকসহ এর আসে পাশের প্রায় লক্ষাধিক নল কুপে উঠছে না পানি। এমনকি ও পানির স্তর নেমে যাওয়ায় নদীর এমন করুন পরিনতির কারনে এখানকার মানুষের পাশা পাশি জীব-বৈচিত্র পড়েছে হুমকীর মুখে। পানির জন্য চলছে হাহাকার। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বলছে প্রাকৃতিক এই সমস্যা সমাধানে তাদের কিছুই করার নাই। তবে বৃষ্টি হলে অবস্থার পরিবর্তন হবে।

কুষ্টিয়া পৌরসভার দেয়া তথ্য মোতাবেক পৌর এলাকার ২১টি ওয়ার্ডে হোল্ডিং সংখ্যা ৩৭ হাজার, যার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই নিজস্ব নলকুপ আছে। এছাড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় দেয়া হয়েছে প্রায় ৫ হাজারের উপরে নলকুপ। পানির স্তর নেমে যাওয়ার কারনে এসব এলাকার প্রায় সব নলকুপই হয়ে গেছে অকেজো। যেগুলো কাজ করছে সেগুলোতে পানি উঠছে অতি সামান্য। ১ বালিÍ পানি তুলতে আধাঘন্টারও বেশি সময় লাগছে। শুধু পৌর এলাকাই নয়, শহর সংলগ্ন হরিপুর ইউনিয়ন, কয়া, শিলাইদহ ইউনিয়ন সহ আরো অনেক এলাকায় চলছে পানির জন্য হাহাকার। তবে গড়াই নদীর তীরবর্তী বসবাস কর মানুষের অবস্থা সব চাইতে বেশি খারাপ। পানির সংকট এতটাই প্রকট যে খাবার পানির পাশা পাশি গোছল, এবং গবাদি পশুর জন্য পানির ব্যাবস্থা করতে হিমশিম খাওয়া লাগছে। পানির জন্য নদীর চরের প্রায় দেড় দুই কিলোমিটার হেটে যেতে হচ্ছে তাদের। এমন সংকটে এর আগে কখনো পরেননি তারা। গড়াই নদীর উপর অবস্থিত সৈয়দ মাছ উদ রুমী সেতু এবং গড়াই ব্রীজের নিচে ড্রেজিং করার ফলে কিছুটা পানি প্রবাহ থাকলেও অধিকাংশ পিলার ধুধু বালির উপর রয়েছে। সাধারণ মানুষ এই গড়াই নদীর অনেক স্থান দিয়ে হেঁটে পার হচ্ছে। পানি শূন্য এই গড়াই নদী শুধুই এখন স্মৃতি। ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবেই এই গড়াই নদীর করুন দশা বলে অনেকেই মন্তব্য করছে।

কুষ্টিয়া পৌর কতৃপক্ষ বলছে, নদী গুলোর নাব্যতা না থাকার পাশা পাশি পানির স্তর বিগত বছর গুলোর তুলনায় ২৫ থেকে ৩০ফিট নেমে যাওয়ায় হস্ত চালিত নলকুপে উঠছে না পানি। পানি সরবরাহের বিকল্প ব্যবস্থা সক্রিয় না থাকায় বিপাকে পরেছে জনজীবন। এমনকি পৌরসভার পক্ষ থেকে যে সাপ্লাই পানির ব্যাবস্থা করা আছে তার উৎপাদন ও অনেক কম। এটি একটি প্রাকৃতিক সমস্যা। বৃষ্টি শুরু হলেই এই সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে।

আর পানির স্তর এভাবে কমে যাওয়ার পেছনে যত্রতত্র গভীর নলকুপ ব্যবহারকে দায়ী করছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। তারা বলছেন, শুস্ক মৌসুমে পানির স্তর নিচে নামার সাথে সাথে নদীর পানিওয়াদি শুকিয়ে যায় সেক্ষেত্রে যেসব নলকুপের লেয়ারকম দেয়া সেসব নলকুপে পানি না ওঠারই কথা। সেক্ষেত্রে নতুন নলকুপ স্থাপনের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা মাফিক আরো গভিরে লেয়ার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উৎস গুলো থেকে আসা পানি নদীতে সংরক্ষন করা গেলে অনাবৃষ্টি বা শুস্ক মৌসুমে যেমন মিটবে পানির চাহিদা অন্যদিকে বাড়বে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আর এভাবেই সম্ভব এই সমস্যা থেকে বেড়িয়ে আসার, এমনটাই দাবী ভুক্তভুগী সকলের।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads